সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হর্নেডজিটেফের কফিন এবং আধুনিক বিজ্ঞান

 

যখন আমি ব্রিটিশ মিউজিয়াম নিয়ে আলোচনা করি, তখন প্রথমেই আমার কৌতুহল ও আগ্রহের কেন্দ্র হয় সেখানে থাকা মমিগুলো। এখনো আমি মনে করি, প্রথমবার মিউজিয়ামে আসা বেশিরভাগ মানুষই সেখান থেকেই শুরু করে। তখন আমার কৌতূহলের বিষয় ছিল মমিগুলো নিজেই—মৃতদেহগুলোর সেই শিহরণ জাগানো, রহস্যময় এবং কিছুটা ভীতিকর উপস্থিতি। আজও যখন আমি ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামে যাই কিংবা প্রধান সিঁড়ি বেয়ে উঠি, তখনও দেখি উচ্ছ্বসিত শিশুদের দল মিশরীয় গ্যালারির দিকে ছুটে যাচ্ছে, যেন তারা মমিদের রহস্য আর ভয়ের মুখোমুখি হতে চায়। তবে এখন আমার আগ্রহের বিষয় মমির কফিনগুলো। যদিও এটি মিউজিয়ামের প্রাচীনতম বস্তু নয়, তবে ইতিহাসের যাত্রা শুরু করার জন্য এটি বেশ উপযুক্ত। আমি এখান থেকে আজ আলোচনা শুরু করছি কারণ মমি এবং তাদের কফিন আজও মিউজিয়ামের অন্যতম আকর্ষণীয় নিদর্শন। এগুলো দেখায় ইতিহাসের এই অনুসন্ধান কীভাবে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলবে—এবং কখনো কখনো সেসব প্রশ্নের উত্তরও দেবে। আমি বিশেষভাবে এই মমির কফিনটি বেছে নিয়েছি, যা খ্রিস্টপূর্ব ২৪০ সালের দিকে এক উচ্চপদস্থ মিশরীয় পুরোহিত, হর্নেডজিটেফের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এটি মিউজিয়ামের অন্যতম চমকপ্রদ নিদর্শন এবং আজও নতুন নতুন তথ্য প্রকাশ করে চলেছে, যেন সময়ের ওপার থেকে আমাদের কাছে বার্তা পাঠাচ্ছে।
আমরা যখন কোনো মিউজিয়ামে বহু বছর পর ফিরে যাই, তখন আমাদের মনে হয় যে আমরা অনেক বদলে গেছি, অথচ সেখানকার জিনিসগুলো ঠিক আগের মতোই রয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। নতুন গবেষণা এবং আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা ক্রমাগত এসব বস্তু সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য জানতে পারছি।হর্নেডজিটেফের মমিটি রাখা হয়েছে একটি বিশাল কালো কফিনের ভেতরে, যা মানুষের শরীরের আকৃতির। এর ভেতরে রয়েছে একটি সুসজ্জিত অভ্যন্তরীণ কফিন এবং তারপর মমিটি, যা বিশেষভাবে সংরক্ষিত, তাবিজ ও কবচে মোড়ানো। আমরা হর্নেডজিটেফ সম্পর্কে যা কিছু জানি, তা শুধুমাত্র এই কফিনের মধ্যেই লুকিয়ে আছে। বলা যায়, তিনিই তার নিজের জীবনগাথা, যা আজও আমাদের তার সময়ের গল্প শুনিয়ে যাচ্ছে। ১৮৩৫ সালে এই মমিটি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে আসে, যখন মিশরীয় হায়ারোগ্লিফ লিপির পাঠোদ্ধার মাত্র সম্পন্ন হয়েছে। প্রথমে তার কফিনের লেখাগুলো পড়ে জানা যায় তার নাম, তার পেশা এবং ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে তথ্য। কফিনের অভ্যন্তরীণ আবরণে লেখা রয়েছে যে তিনি কারনাকের আমুন মন্দিরের একজন পুরোহিত ছিলেন এবং টলেমি তৃতীয়ের শাসনামলে (খ্রিস্টপূর্ব ২৪৬-২২২) জীবনযাপন করতেন। কফিনের মুখমণ্ডলে সোনার প্রলেপ দেওয়া হয়েছে, যা দেবত্বের প্রতীক। মিশরীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, দেবতাদের শরীর সোনার তৈরি। মুখের নিচে রয়েছে সূর্য দেবতা রা-এর প্রতীক, এক ডানা মেলা বিটল পোকা, যা নবজন্মের প্রতীক। তার পাশে আঁকা রয়েছে সূর্যকে উপাসনা করা বাঁদরের ছবি। হর্নেডজিটেফ বিশ্বাস করতেন, যদি তার দেহ সংরক্ষিত থাকে, তবে তিনি মৃত্যুর পরও জীবন লাভ করবেন। কিন্তু সেই জীবনে পৌঁছানোর জন্য তাকে পার করতে হবে এক বিপজ্জনক যাত্রা, যার জন্য তিনি সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। তার সঙ্গে রাখা হয়েছিল বিভিন্ন তাবিজ ও মন্ত্র, যা তাকে যাত্রাপথের বিপদ থেকে রক্ষা করবে। কফিনের ঢাকনার নিচে খোদাই করা হয়েছে বিভিন্ন মন্ত্র, দেবতাদের ছবি এবং নক্ষত্রপুঞ্জের মানচিত্র। এগুলোর অবস্থান এমনভাবে বসানো হয়েছে, যেন তার কফিনের ভেতরেই এক ক্ষুদ্র মহাবিশ্ব তৈরি করা হয়েছে। বলা যায়, হর্নেডজিটেফ নিজের জন্য এক ধরনের তারামণ্ডল এবং সময়যান তৈরি করে নিয়েছিলেন।

বৈজ্ঞানিক গবেষণার উন্নতির ফলে আজ আমরা হর্নেডজিটেফ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারছি, যা ১৮৩৫ সালে সম্ভব ছিল না। বিশেষত, গত বিশ বছরে এমন প্রযুক্তি এসেছে, যা মমির আবরণ খুলে ফেলতে না হয়েও ভেতরের অংশ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার সুযোগ দিয়েছে। আগে মমির অভ্যন্তরে কী আছে তা জানার একমাত্র উপায় ছিল তার মোড়ক খুলে ফেলা, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু আজকের আধুনিক CT স্ক্যান প্রযুক্তির মাধ্যমে মমির ভেতরের অংশ অনায়াসে দেখা যায়। ব্রিটিশ মিউজিয়ামের মিশর ও সুদান বিভাগের কিউরেটর জন টেইলর এই মমিগুলো নিয়ে দুই দশকের বেশি সময় ধরে গবেষণা করছেন। তিনি কয়েকটি মমিকে বিশেষ স্ক্যানিংয়ের জন্য লন্ডনের হাসপাতালে নিয়ে গেছেন, যা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। এই গবেষণায় দেখা গেছে, হর্নেডজিটেফ মধ্যবয়স্ক বা বৃদ্ধ অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন। তার দেহ সংরক্ষণের জন্য সর্বোচ্চ মানের মমিফিকেশন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছিল। তার শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বের করে আবার কফিনে রাখা হয়েছিল এবং সংরক্ষণের জন্য দামি তেল ও রজন ব্যবহার করা হয়েছিল। স্ক্যানের মাধ্যমে তার দেহের ভেতরে ছোট ছোট তাবিজ ও গহনা দেখা গেছে, যা তাকে মৃত্যুর পরের যাত্রায় রক্ষা করার জন্য রাখা হয়েছিল। এছাড়াও, তার দাঁত পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তিনি দাঁতের ক্ষয় ও বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন, এবং তার হাড়ে আর্থ্রাইটিস ছিল, যা তার জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক ছিল। এই নতুন গবেষণা শুধু ব্যক্তিগত জীবনের দিক নয়, বরং বৃহত্তর সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কেও জানার সুযোগ করে দিয়েছে।মমিফিকেশনের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদান বিশ্লেষণ করে বোঝা গেছে, মিশরীয় সভ্যতা কেবল নিজেদের সম্পদেই নির্ভরশীল ছিল না, বরং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্য করত।

উদাহরণস্বরূপ, কিছু মমির কফিনে পাওয়া কালো বিটুমিন রাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে এটি মৃত সাগর থেকে আনা হয়েছিল, যা মিশরের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার বাইরে ছিল। এছাড়া, অনেক কফিন তৈরি হয়েছিল সিডার কাঠ দিয়ে, যা লেবানন থেকে আমদানি করা হয়েছিল। হর্নেডজিটেফ পরকালের যাত্রার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন, কিন্তু তার ভাগ্যে ছিল অন্য কিছু—শেষ পর্যন্ত তিনি এসে পৌঁছালেন লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—তার আসল জায়গা কি এখানে? প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর প্রকৃত স্থান কোথায় হওয়া উচিত?

মিশরীয় লেখক আহদাফ সুইফ একবার বলেছিলেন:

"মিশরীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়াটা হয়তো খুব একটা খারাপ নয়। এটি ঔপনিবেশিক অতীতের কথা মনে করিয়ে দেয় ঠিকই, কিন্তু একইসঙ্গে এটি আমাদের যৌথ ইতিহাসের প্রতীকও।" বস্তুগুলো এখনো কথা বলে, তাদের যাত্রা এখনো শেষ হয়নি, এবং তাদের সম্পর্কে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে। এগুলো আমাদের সকলের ইতিহাসের অংশ।

TRANSLATION 

Hornedjitef, an ancient Egyptian priest, has become the subject of fascinating research thanks to advancements in scientific technology. In 1835, when his mummy was first acquired by the British Museum, little was known about his life beyond what could be deciphered from inscriptions on his coffin. However, over the past two decades, new imaging techniques have transformed our ability to study mummies without causing any damage to them. Previously, the only way to understand what lay beneath the linen wrappings was to physically unwrap a mummy, a process that was not only destructive but also carried the risk of losing valuable historical evidence. Now, with the aid of CT scans, researchers can peer inside mummies with remarkable precision, uncovering details that were once hidden from view. John Taylor, curator of the Egypt and Sudan department at the British Museum, has dedicated over twenty years to the study of mummies. As part of his research, he arranged for several mummies, including Hornedjitef, to be taken to a hospital in London, where specialized scanning equipment provided unprecedented insights into their condition and burial practices. Through these scans, researchers discovered that Hornedjitef had lived to middle or old age, and his body had been preserved using the most advanced mummification techniques available at the time. His internal organs were carefully removed and later placed back inside his coffin—a practice indicating a high-status burial. Expensive oils and resins were used in his preservation, further confirming the quality of care taken in his mummification. One of the most remarkable discoveries was the presence of small amulets and pieces of jewelry within his body. These sacred objects were deliberately placed to protect him on his journey to the afterlife, reflecting the deeply held religious beliefs of ancient Egyptians. Beyond these ritualistic elements, the scans also provided insight into Hornedjitef’s health. His teeth exhibited signs of decay and disease, and his bones showed clear evidence of arthritis, a condition that must have caused him significant discomfort in his later years. These details, though seemingly small, help paint a more personal picture of Hornedjitef’s life, offering a glimpse into the daily struggles and medical realities of people in ancient Egypt. Beyond his personal history, the study of Hornedjitef’s mummy also reveals a broader story about the economic and cultural interactions of the time. The materials used in his burial suggest that Egypt was not an isolated civilization but one that engaged in extensive trade with neighboring regions. Chemical analysis of black bitumen found in some mummy coffins has shown that it was sourced from the Dead Sea, an area beyond Egyptian-controlled territory. Similarly, many wooden coffins were crafted from cedarwood, which had to be imported from Lebanon. These findings emphasize that ancient Egyptian society was interconnected with the wider world, relying on foreign resources to uphold its elaborate burial traditions. Despite all the knowledge gained from studying Hornedjitef, his final resting place remains a subject of debate. Though he carefully prepared for his journey to the afterlife, he now resides in the British Museum, far from his homeland. This raises the enduring question of where archaeological artifacts truly belong. Should they remain in institutions where they can be studied and appreciated by a global audience, or should they be returned to their countries of origin? Egyptian writer Ahdaf Soueif has reflected on this issue, acknowledging the complex nature of cultural heritage. While the dispersal of Egyptian artifacts around the world is a reminder of a colonial past, she also suggests that these objects serve as a testament to our shared human history. Their presence in museums across different continents allows for continued research and engagement, ensuring that they remain part of an ongoing global conversation. The journey of these artifacts is not yet over—they continue to speak to us, revealing new stories and insights as science advances.


Written by: KALCHAKRA 

আরো পড়ুন

১. এক তান্ত্রিক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর গল্প

২. মধ্যযুগের ডুকাটের গল্প

৩. নীলাম্বর মুখোপাধ্যায়ের বাগানবাড়ি

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মধ্যযুগে বাণিজ্যে ডুকাটের কাহিনী

মুদ্রা সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের নেশা বহু মানুষেরই রয়েছে। সেই মুদ্রা সংগ্রহ কেউ মিন্ট মার্ক অথবা কেউ ইতিহাসের সময়কাল ধরে করে থাকেন। বিশেষ করে যারা বিদেশ ভ্রমণে যান, ভ্রমণের পর, অবশিষ্ট বৈদেশিক অর্থ মানি এক্সচেঞ্জের অফিসে পরিবর্তন করে থাকেন। তবে ইতিহাস পর্যালোচনা করলে লক্ষ্য করা যায়, প্রাচীন সময়ে বৈদেশিক অর্থ বিনিময় একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা রূপে পরিচিত ছিল। বিশেষ করে মধ্যযুগে যখন নতুন নতুন ভূখণ্ড আবিষ্কার হতে থাকে তখন সেই সব ভূখন্ডের সম্পদের প্রতি মানুষের তীব্র আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদার জন্য ব্যাপকভাবে বাণিজ্য শুরু হয়, এবং মধ্যযুগের বাণিজ্যের দিক থেকে ভেনিস ছিল সকলের থেকে এগিয়ে, তাদের এক ধরনের বিশেষ মুদ্রা "ভেনেসিয়ান ডুকাট" ভারতেও প্রবেশ করেছিল ব্যাপক হারে। প্রধানত দক্ষিণ ভারতে এই ডুকাট খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। 2011 সালে তিরুবনন্তপুরমের পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের যখন গুপ্ত ভল্ট গুলির একটি খোলা হয়েছিল, তখন সেখানে অন্যান্য ধন-সম্পদের সাথে ব্যাপকভাবে সোনার ডুকাট পাওয়া গিয়েছিল। মধ্যযুগে একাদশ থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত ক্রুসেড চলেছিল, সেই সময় ইউরোপের ভাগ্যে একটি নাটকীয় পরিবর্তন দেখ...

এক ব্রিটিশ সমাধির অজানা গল্প

   আমরা যারা ইতিহাস চর্চা করি, 'লর্ড কর্নওয়ালিস' এই নামটির সাথে সকলেই বিশেষভাবে পরিচিত। ভারতের পবিত্র পূণ্য ক্ষেত্র বেনারস থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গাজীপুর, এই স্থানে ব্রিটিশ গর্ভনর জেনারেল লর্ড কর্নওয়ালিসের সমাধিটি অবস্থিত রয়েছে। ইতিহাস বলে কর্নওয়ালিস সাহেব আমেরিকার প্রথম রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটনের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু তার এই পরাজয় জীবনকে থামিয়ে দেয় নি বরং পরবর্তীতে ভারতে বহু যুদ্ধে জয়লাভ করতে সাহায্য করেছিল। অনেক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্যে তিনি ব্রিটিশ সরকারের একজন শক্তিশালী প্রতিনিধি হতে পেরেছিলেন। ভারতের বেনারস বা বারাণসীতে তাঁর সমাধিটি লাড সাহাব বা লাত সাহাব বা লর্ড সাহাব কা মাকবারা নামে পরিচিত। আমেরিকাতে যুদ্ধে পরাজয়ের পর তিনি ভারতবর্ষে আসেন। ১৭৮৬ সালে ভারতে লর্ড কর্নওয়ালিস দ্বিতীয় গভর্নর জেনারেল এবং কমান্ডার-ইন-চীফ হিসেবে কর্মে যোগদান করেছিলেন। খুব দক্ষতা এবং কৌশলের মাধ্যমে তিনি ব্রিটিশদের সম্পর্কে ভারতবাসীর তীব্র ঘৃণাটাকে কিছুটা হলেও দূর করবার চেষ্টা করেছিলেন এবং নিজেকে একজন সফল গভর্নর ও সমাজ সংস্কারক হিসেবে পরিচিত করবার চেষ্টায় ...

হারিয়ে যাওয়া কিছু গ্রন্থাগারের ইতিহাস

আমরা প্রাচীন যুগ থেকেই বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছি এবং তার ই তাগিদে প্রাচীন বিশ্বে বহু গ্রন্থাগার গড়ে উঠেছিল। বিভিন্ন সময়ে মানুষের উদ্যোগে গ্রন্থাগার গুলি পূর্ণতা পেয়েছিল। আজকে আমরা সেই সকল গ্রন্থাগার এবং তাদের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করব। 1. আশুরবানিপালের গ্রন্থাগার অ্যাসিরিয় সভ্যতায় রাজা আশুরবানিপালের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। নব্য-অ্যাসিরিয়ান সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন আশুরবানীপাল। খ্রিস্টপূর্ব ৬৬৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ৬৩১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত তার সময়কাল ছিল বলে মনে করেন ঐতিহাসিকগণ, এবং তাঁকে আসিরীয়ার শেষ মহান রাজা হিসেবেও স্মরণ করা হয়ে থাকে। আশুরবানিপাল তার পিতা এসারহাদ্দনের পর উত্তরাধিকারী সূত্রে সিংহাসন লাভ করেছিলেন, তার ৩৮ বছরের রাজত্বকালে তিনি বহু যুদ্ধে জয়লাভ করে এবং আসিরীয় সভ্যতায় এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় তিনি সৃষ্টি করেছিলেন। ৭ম শতাব্দীতে আশুরবানিপালের "রাজকীয় চিন্তাভাবনার" জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই প্রাচীন গ্রন্থাগার এবং গ্রন্থাগারটি আধুনিক দিনের ইরাকের নিনেভেতে অবস্থিত ছিল।প্রত্নতাত্ত্ব...