সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

টমাস সাহেবের গপ্পো

 

জুতো হল এমন একটি বস্তু যার মাধ্যমে মানুষের পা আরাম ও রক্ষা পেয়ে থাকে। তবে সময়ের সাথে সাথে জুতোও ফ্যাশনের বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। কিছু জুতো প্রবল নিরাপত্তার সরঞ্জাম হিসাবে ব্যবহৃত হয়, তার মধ্যে স্টিল-টো বুট উল্লেখযোগ্য , এই জুতো শিল্প কারখানায় ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়ে থাকে আবার কিছু বুট বিশেষভাবে পর্বতারোহণ বা স্কিইং- এর জন্য ডিজাইন করা হয়ে থাকে। এই সকল জুতোগুলি ছাড়া, দৈনন্দিন জুতোগুলিকে ও প্রায়শই বিভিন্ন ডিজাইনে বিকশিত হতে দেখা যায়, যেমন হাই হিল জুতো, যা সাধারণত অভিনব অনুষ্ঠানে মহিলাদের দ্বারা পরিধান করতে দেখা যায়। বর্তমানে বিখ্যাত ডিজাইনারদের দ্বারা তৈরি  জুতোগুলি ফ্যাশনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যয়বহুল উপকরনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়ে থাকে। প্রাচীন সময় থেকে ঐতিহ্যগতভাবে বিভিন্ন জুতো চামড়া, কাঠ বা ক্যানভাসের মাধ্যমে তৈরি হয়ে এসেছে, তবে বর্তমান সময়ে রাবার, প্লাস্টিক এবং অন্যান্য পেট্রোকেমিক্যাল থেকে প্রাপ্ত উপকরণ থেকেও জুতো তৈরি করা হচ্ছে।

তবে ইতিহাস বলছে, বিশ্বের প্রাচীনতম জুতোগুলি হল:-

সেজব্রাশ বার্কের স্যান্ডেল যা আনুমানিক ৭০০০ বা ৮০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের, যা ১৯৩৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন রাজ্যের ফোর্ট রক গুহায় পাওয়া যায়। এই জুতোর সামনে এবং পিছনের সীম বরাবর চামড়ার কর্ড লক্ষ্য করা যায়। "Ötzi", দ্য আইসম্যানের জুতো, খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০০ সালের, বাদামী হরিণের চামড়ার মাধ্যমে এই জুতোটি তৈরি। বিশেষ করে চামড়ার শক্ত বুনন দিয়ে যেভাবে জুতার ফিতে তৈরি করা হয়েছে, তা সত্যিই আমাদের অবাক করে। এই দুই জুতো ছাড়াও এমন অনেক জুতো ইতিহাসে লক্ষ্য করা যায়, যেগুলি তৈরীর জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ এবং তন্তুর ব্যবহার করা হয়েছিল। 

তবে আজকে আমরা কথা বলব প্রাচীন জুতোর ইতিহাস নিয়ে নয় বরং টমাস সাহেবের আধুনিক জুতো শিল্পের ইতিহাস নিয়ে ।

টমাস সাহেব

টমাস সাহেবের জন্ম চেকোস্লোভাকিয়াতে, তবে ভাগ্যের বিরম্বনায় মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি মাতৃহারা হয়েছিলেন। তাঁর পূর্বপুরুষ সকলেই ছিলেন দক্ষ চর্মকার। তিনি বাবার কাছে ৬ বছর বয়স থেকে চামড়ার কাজ শিখতে শুরু করেছিলেন। এরপর ১২ বছর বয়সেই টমাস জুতো তৈরিতে পারদর্শী হয়ে ওঠেন, কিন্তু এই তাঁর চোখে তখন অন্য স্বপ্ন এবং মাত্র ১৮ বছর বয়সে ছেলেটি তার দাদা আন্তোনিন ও দিদি অ্যানাকে বুঝিয়ে বলেন যে একটা ছোট্ট দোকান থেকে আর ক'টা জুতো বিক্রি হবে, তার থেকে চল আমরা তিন ভাইবোন মিলে একটা জুতোর কোম্পানি শুরু করতে পারি তাতে জুতো বিক্রি হবে অনেক বেশি আর সেই কোম্পানিতে কর্মসংস্থানও হবে কিছু মানুষের। বহু কষ্টে কুড়িয়ে বাড়িয়ে মাত্র ৩২০ ডলার জোগাড় করতে পেরেছিলেন এই তিন ভাইবোন আর তাই দিয়েই ১৮৯৪ সালে তাঁরা বানিয়ে ফেললেন একটি জুতোর কোম্পানি।

শুরুতে মাত্র ১০ জন কর্মীকে নিয়ে জুতোর কোম্পানিটি শুরু হয়েছিল তবে কোম্পানিটি কিন্তু একবছরেই দেউলিয়াও হয়ে গিয়েছিল। এতটাই খারাপ অবস্থা হয়েছিল যে জুতো তৈরির চামড়া কেনার টাকাও ছিল না। তাঁর জায়গায় অন্য কেউ হলে ব্যবসার সেখানেই ইতি টানতেন, কিন্তু তিনি সেখান থেকেই আবার শুরু করলেন। বললেন চামড়া নেই তো কী হয়েছে, ক্যানভাস কাপড় দিয়ে জুতো বানাবো আমরা। বানাতে খরচ বেশি নয়, তাই দামেও সস্তা হবে। নতুনভাবে হলো "জুতা আবিষ্কার"! এইভাবে তৈরি হলো পৃথিবীর প্রথম ক্যানভাসের জুতো (যে জুতো কে আমরা বলি কেডস) আর সেই জুতো বাজারে পড়া মাত্রই হয়ে গেল সুপারহিট! মাত্র এক বছরের মধ্যে দেনা শোধ করে ঘুরে দাঁড়ালো টমাস সাহেবের কোম্পানি!

দাদা ও দিদির সাথে টমাস সাহেব

টমাস সাহেব অল্প সময়েই বুঝেছিলেন প্রোডাকশন বাড়াতে হলে আমেরিকার আবিষ্কার অ্যাসেম্বলি লাইন বস্তুটি আয়ত্ত করতেই হবে তারপরেই চলে গেলেন আমেরিকা। তিনি সর্বদাই হাতে কলমে শিক্ষার অন্ধভক্ত ছিলেন! একটি স্কুলে একবার তাঁকে বক্তৃতা দিতে ডাকা হয়েছিল। ক্লাসে গিয়ে দেখেন বাচ্চারা মিশ্রণের অনুপাত নিয়ে জটিল অঙ্ক করছে ব্ল্যাকবোর্ডে। তিনি বললেন "ফেলে দাও এসব অঙ্ক, চলো কেক বানাই ! মিশ্রণ আর অনুপাত শেখার ওঁর থেকে ভালো অঙ্ক নেই!" সেই ক্লাসে সত্যি সত্যিই তিনি কেক বানিয়েছিলেন! তাঁর এই বাস্তবায়িতা গুণের মাধ্যমে তিনি চেকোশ্লোভাকিয়ায় রাস্তাগুলোকেও নতুন রূপ দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

এই বাস্তবতা গুণ দিয়েই ক্রমাগত জটিল সমস্যার সহজ সমাধান করেছেন টমাস সাহেব। একবার দেখা গেলো কারখানা থেকে শোরুমে নিয়ে যাওয়ার পথে চুরি হয়ে যাচ্ছে জুতোর বাক্স ! সবাই টমাস সাহেবকে বুদ্ধি দিলো সিকিউরিটি গার্ড ভাড়া করার। তিনি বললেন "প্রথমে বাঁ পায়ের সব জুতোগুলো পাঠিয়ে দাও, তার দু'দিন পর ডান পায়ের" ! এরপর দেখা গেল জুতো চুরি রাতারাতি খুব সহজেই বন্ধ হয়ে গেলো ! জুতোর দামের ক্ষেত্রেও উনি অদ্ভুতভাবে ৯ সংখ্যাটা দিয়ে শেষ করতেন, কেননা উনি বুঝেছিলেন ১০০র জায়গায় ৯৯ লিখলে ক্রেতারা বলবেন "একশো টাকারও কমে পেলাম।" সেই মনস্তাত্ত্বিক পদ্ধতি কিন্তু আজও ব্যবহার হয়ে থাকে !

টমাস সাহেবের কোম্পানির তৈরি প্রথম জুতো

টমাস সাহেব আমেরিকা থেকে ফিরে অ্যাসেম্বলি লাইনের সাহায্যে তার প্রোডাকশন বাড়িয়ে ফেললেন আগের থেকে প্রায় ১০ গুন এবং কোম্পানির তখন রমরমা ব্যবসা চলছে। এর মধ্যে তার জীবনে ঘটলো দুটি গুরুতর ঘটনা তাঁর দাদা আন্তোনিন মারা গেলেন এবং তার কিছু সময়ের মধ্যেই তার দিদি অ্যানা বিয়ে করে  ব্যবসা ছেড়ে চলে গেলেন। এবার কোম্পানির হাল আরো শক্ত করে ধরলেন টমাস। ব্যবসা আসলে টীমওয়ার্ক তিনি সেটা বুঝেছিলেন, তাই তিনি তাঁর কর্মচারীদের মুনাফার ভাগ দিতে লাগলেন। তবে শর্ত হলো ব্যবসার ক্ষেত্রে যদি মন্দা আসে তাহলে তাঁরাও সে ক্ষতির ভাগও নেবেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মিলিটারি জুতো তৈরির বড় অনেকগুলি কন্ট্রাক্ট পেলেন টমাস সাহেব, তাঁর ব্যবসা সেই সময় খুব দ্রুত সাফল্যের শিখরে পৌঁছে গিয়েছিল!

বাটা কোম্পানির লোগোর ক্রমপরিবর্তন 

সুইজারল্যান্ডে ১৯৩২ সালে কোম্পানির একটি শাখা উদ্বোধন করতে গিয়ে হঠাৎ বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান টমাস সাহেব। তবে তার থেকেও আশ্চর্য ব্যাপার, পৃথিবীর ৭২টা দেশে  তাঁর তৈরি কোম্পানির শাখা থাকলেও  হেড কোয়ার্টার কিন্তু সুইজারল্যান্ডে! টমাস সাহেবের মৃত্যুর পর তার সৎ ভাই ‘জ্যান আন্টোনিন কোম্পানিটির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বাটা কোম্পানির বিজ্ঞাপন

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা যেটা আপনাদের না বললেই নয়, টমাস সাহেবের বানানো জুতো আমরা সকলেই পরেছি, তাঁর সম্পূর্ণ নাম টমাস জ্যান বাটা। তিনি হলেন বাটা কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৩২ থেকে ১৯৪২ এর মধ্যে বাটা কোম্পানির মোট কর্মীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১০৫,৭৭০ জন, এবং এখনো বার্ষিক ভাবে সমগ্র বিশ্বের প্রায় ১৪০ কোটি মানুষ বাটার জুতো ব্যবহার করেন। বাটা কোম্পানী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে বহুভাবে সাহায্য করে, বিশ্ব জনমতকে প্রভাবিত করেছিল। এই সাহেবের জীবনী হাতে এসেছিলো বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবং জীবনীটি পড়ে এমনই মুগ্ধ হয়ে যান বিভূতিভূষণ বাবু যে তিনি কাগজ কলম নিয়ে বসে পড়েন। পুরো জীবনীটি বিভূতিভূষণ বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তাঁর মনে হয়েছিল চাকরি প্রত্যাশী প্রত্যেকটি তরুণ তরুণীর এই জীবনী পড়া উচিত। তিনি এই জীবনী নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন বেঙ্গল কেমিক্যালের পথিকৃৎ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের কাছে, সে জীবনী পড়ে আচার্য্যও মুগ্ধ হয়েছিলেন! তিনি বিভূতিভূষণ বাবুর অনুবাদ বইটির ফরওয়ার্ডও লিখে দিয়েছিলেন। তবে দুঃখের বিষয়, বইটি ছাপা হলেও জনপ্রিয় হয়নি কারণ সকলের মনে হয়েছিল চর্মকারের জীবনী আবার কে পড়ে! টমাস সাহেবের একটি উক্তিকে সুন্দর অনুবাদ করেছিলেন বিভূতিভূষণ বাবু- "পথের দৈর্ঘ্য কম হলে, জীবনের দৈর্ঘ্য বাড়ে"!। টমাস সাহেব বলতেন, যদি কেউ জীবনে চলার পথে ধীর গতিতে চলে তাহলে সে অর্ধমৃত এবং যদি কেউ চলতে চলতে দাঁড়িয়ে পড়ে তাহলে সে সম্পূর্ণ মৃত। আপনাদের অনুরোধ করব খুব ভালো হয়, যদি আপনারা স্বনামধন্য লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুবাদ করা টমাস বাটা-র জীবনী পড়ে ফেলতে পারেন, বিশ্বাস করুন আপনাদের মুগ্ধ হতে বেশি সময় লাগবে না।

TRANSLATION 

The evolution of footwear has been remarkable, transitioning from basic protective gear to significant fashion statements. Historically, shoes were crafted from materials like leather, wood, and canvas. In modern times, the industry has embraced materials such as rubber, plastic, and other petrochemical derivatives, reflecting advancements in technology and changing consumer preferences. One of the most influential figures in the modern shoe industry is Tomáš Baťa, born on April 3, 1876, in Zlín, Moravia, in what is now the Czech Republic. Coming from a lineage of cobblers dating back to 1667, Baťa was immersed in shoemaking from a young age. At just ten years old, he faced the tragedy of losing his mother. By the age of twelve, he had become proficient in shoemaking, having learned the craft from his father. However, Baťa harbored ambitions beyond the confines of his family's small workshop. In 1894, at the age of eighteen, Tomáš, along with his brother Antonín and sister Anna, founded the T. & A. Bata Shoe Company in Zlín. Pooling their resources, they managed to gather 800 Austrian gulden to start their venture. Initially, the company faced significant challenges, including financial difficulties that nearly led to bankruptcy within the first year. Undeterred, Baťa showcased his innovative spirit by introducing shoes made from canvas instead of the traditional leather, making them more affordable and appealing to a broader audience. This pivot proved successful, allowing the company to repay its debts and establish a foothold in the market.

Baťa was a visionary who recognized the importance of efficiency and mass production. He adopted assembly line techniques, inspired by Henry Ford's methods in the United States, to scale up production. This approach enabled the company to produce shoes at an unprecedented rate, meeting the growing demand both locally and internationally. His commitment to practical education was evident when he emphasized hands-on learning experiences, such as teaching students about ratios and mixtures through baking, rather than traditional rote methods. His innovative problem-solving skills were also notable. For instance, when faced with thefts during the transportation of shoe boxes from the factory to the showroom, instead of investing in security personnel, Baťa ingeniously decided to ship only the left shoes first and the right ones later. This strategy rendered the stolen shoes useless, effectively curbing the thefts. He also understood consumer psychology, pricing his products ending in the number nine, making them appear more affordable and enticing to customers—a tactic still prevalent in retail today. The company experienced rapid growth, but personal tragedies struck when his brother Antonín passed away, and his sister Anna left the business after marriage. Tomáš Baťa then took full control, emphasizing teamwork and introducing profit-sharing models with his employees. He believed that employees should share in both the profits and the losses, fostering a sense of ownership and responsibility. During World War I, the company secured substantial contracts to produce military shoes, significantly boosting its growth. By 1928, the factory was producing 75,000 pairs of shoes daily, making it the largest leather factory in Europe. Baťa's influence extended beyond shoemaking; as the mayor of Zlín, he transformed the town with modern infrastructure, reflecting his holistic vision of progress. Tragically, on July 12, 1932, Tomáš Baťa died in a plane crash in Otrokovice. By that time, he had diversified into 36 fields of manufacturing, trade, service, and transportation, providing employment to over 31,000 people. The annual production had reached 36.3 million pairs of shoes, accounting for 81% of the shoes produced in Czechoslovakia and 75% of the country's footwear exports. 

After his death, his half-brother, Jan Antonín Baťa, took over the company's operations. The legacy of Tomáš Baťa continued through his son, Thomas J. Bata, born on September 17, 1914, in Prague. Thomas J. Bata led the company from the 1940s until the 1980s, further expanding its global reach. He was recognized for his contributions to business and philanthropy, being invested as a Companion of the Order of Canada in 1972 and receiving the Order of Tomáš Garrigue Masaryk in the Czech Republic. Today, the Bata Shoe Organization operates in numerous countries, with a significant presence in India, where it has become a household name. The company's commitment to quality and affordability has ensured its products remain popular across diverse demographics. The inspiring journey of Tomáš Baťa was introduced to Bengali readers through a translation by the renowned author Bibhutibhushan Bandyopadhyay. Moved by Baťa's life story, Bandyopadhyay believed that it held valuable lessons for young job seekers and entrepreneurs. He even approached Acharya Prafulla Chandra Ray, a pioneer in the Indian chemical industry, who was equally impressed and wrote the foreword for the translated biography. Although the book did not gain widespread popularity at the time, it remains a testament to Baťa's enduring legacy and the universal lessons of perseverance, innovation, and leadership.

Written by:-  KALCHAKRA 

আরো পড়ুন

১. পৃথিবীর হারিয়ে যাওয়া গ্রন্থাগারের ইতিহাস

২. মধ্যযুগের ডুকাটের গল্প

৩. চৈতন্য যুগের শিল্পকলা 

৪. এক ব্রিটিশ সমাধির গল্প

৫. এক তান্ত্রিক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর গল্প

৬. স্বামীজীর ভাবনায় নীলাম্বরের বাগানবাড়ি


মন্তব্যসমূহ

  1. এখানে ১৪০০ কোটি মানুষের কথা বলা হয়েছে যারা বাটা এর জুতো ব্যবহার করেন। তবে পুরো বিশ্বে ৮০০ কোটি approx, মানুষ থাকেন সেখানে ১৪০০ কোটি কিভাবে আসছে।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. How many shoes does Bata sell?

      The corporation is one of the world's leading shoemakers by volume with 150 million pairs of shoes sold annually.
      এটা Google Survey বলছে।

      মুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মধ্যযুগে বাণিজ্যে ডুকাটের কাহিনী

মুদ্রা সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের নেশা বহু মানুষেরই রয়েছে। সেই মুদ্রা সংগ্রহ কেউ মিন্ট মার্ক অথবা কেউ ইতিহাসের সময়কাল ধরে করে থাকেন। বিশেষ করে যারা বিদেশ ভ্রমণে যান, ভ্রমণের পর, অবশিষ্ট বৈদেশিক অর্থ মানি এক্সচেঞ্জের অফিসে পরিবর্তন করে থাকেন। তবে ইতিহাস পর্যালোচনা করলে লক্ষ্য করা যায়, প্রাচীন সময়ে বৈদেশিক অর্থ বিনিময় একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা রূপে পরিচিত ছিল। বিশেষ করে মধ্যযুগে যখন নতুন নতুন ভূখণ্ড আবিষ্কার হতে থাকে তখন সেই সব ভূখন্ডের সম্পদের প্রতি মানুষের তীব্র আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদার জন্য ব্যাপকভাবে বাণিজ্য শুরু হয়, এবং মধ্যযুগের বাণিজ্যের দিক থেকে ভেনিস ছিল সকলের থেকে এগিয়ে, তাদের এক ধরনের বিশেষ মুদ্রা "ভেনেসিয়ান ডুকাট" ভারতেও প্রবেশ করেছিল ব্যাপক হারে। প্রধানত দক্ষিণ ভারতে এই ডুকাট খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। 2011 সালে তিরুবনন্তপুরমের পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের যখন গুপ্ত ভল্ট গুলির একটি খোলা হয়েছিল, তখন সেখানে অন্যান্য ধন-সম্পদের সাথে ব্যাপকভাবে সোনার ডুকাট পাওয়া গিয়েছিল। মধ্যযুগে একাদশ থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত ক্রুসেড চলেছিল, সেই সময় ইউরোপের ভাগ্যে একটি নাটকীয় পরিবর্তন দেখ...

এক ব্রিটিশ সমাধির অজানা গল্প

   আমরা যারা ইতিহাস চর্চা করি, 'লর্ড কর্নওয়ালিস' এই নামটির সাথে সকলেই বিশেষভাবে পরিচিত। ভারতের পবিত্র পূণ্য ক্ষেত্র বেনারস থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গাজীপুর, এই স্থানে ব্রিটিশ গর্ভনর জেনারেল লর্ড কর্নওয়ালিসের সমাধিটি অবস্থিত রয়েছে। ইতিহাস বলে কর্নওয়ালিস সাহেব আমেরিকার প্রথম রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটনের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু তার এই পরাজয় জীবনকে থামিয়ে দেয় নি বরং পরবর্তীতে ভারতে বহু যুদ্ধে জয়লাভ করতে সাহায্য করেছিল। অনেক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্যে তিনি ব্রিটিশ সরকারের একজন শক্তিশালী প্রতিনিধি হতে পেরেছিলেন। ভারতের বেনারস বা বারাণসীতে তাঁর সমাধিটি লাড সাহাব বা লাত সাহাব বা লর্ড সাহাব কা মাকবারা নামে পরিচিত। আমেরিকাতে যুদ্ধে পরাজয়ের পর তিনি ভারতবর্ষে আসেন। ১৭৮৬ সালে ভারতে লর্ড কর্নওয়ালিস দ্বিতীয় গভর্নর জেনারেল এবং কমান্ডার-ইন-চীফ হিসেবে কর্মে যোগদান করেছিলেন। খুব দক্ষতা এবং কৌশলের মাধ্যমে তিনি ব্রিটিশদের সম্পর্কে ভারতবাসীর তীব্র ঘৃণাটাকে কিছুটা হলেও দূর করবার চেষ্টা করেছিলেন এবং নিজেকে একজন সফল গভর্নর ও সমাজ সংস্কারক হিসেবে পরিচিত করবার চেষ্টায় ...

হারিয়ে যাওয়া কিছু গ্রন্থাগারের ইতিহাস

আমরা প্রাচীন যুগ থেকেই বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছি এবং তার ই তাগিদে প্রাচীন বিশ্বে বহু গ্রন্থাগার গড়ে উঠেছিল। বিভিন্ন সময়ে মানুষের উদ্যোগে গ্রন্থাগার গুলি পূর্ণতা পেয়েছিল। আজকে আমরা সেই সকল গ্রন্থাগার এবং তাদের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করব। 1. আশুরবানিপালের গ্রন্থাগার অ্যাসিরিয় সভ্যতায় রাজা আশুরবানিপালের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। নব্য-অ্যাসিরিয়ান সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন আশুরবানীপাল। খ্রিস্টপূর্ব ৬৬৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ৬৩১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত তার সময়কাল ছিল বলে মনে করেন ঐতিহাসিকগণ, এবং তাঁকে আসিরীয়ার শেষ মহান রাজা হিসেবেও স্মরণ করা হয়ে থাকে। আশুরবানিপাল তার পিতা এসারহাদ্দনের পর উত্তরাধিকারী সূত্রে সিংহাসন লাভ করেছিলেন, তার ৩৮ বছরের রাজত্বকালে তিনি বহু যুদ্ধে জয়লাভ করে এবং আসিরীয় সভ্যতায় এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় তিনি সৃষ্টি করেছিলেন। ৭ম শতাব্দীতে আশুরবানিপালের "রাজকীয় চিন্তাভাবনার" জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই প্রাচীন গ্রন্থাগার এবং গ্রন্থাগারটি আধুনিক দিনের ইরাকের নিনেভেতে অবস্থিত ছিল।প্রত্নতাত্ত্ব...